মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১
প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ’র ৮০তম জন্মবার্ষিকী ও নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউইয়র্কের লাগুর্ডিয়া ম্যারিয়টে। এ উপলক্ষে রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক ও এর আশেপাশের বিভিন্ন স্টেট থেকে লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক,শিক্ষক, চিকিৎসক, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্টসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ যোগ দেন এই নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
সংবর্ধনার জবাবে এই গুণী ব্যক্তিত্ব তাঁর বিনয় প্রকাশ করে বলেন,আপনাদের এ সংবর্ধনা পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। আপনাদের ভালবাসায় আমি ধন্য। বক্তৃতার সময় নিজেকে এসএসসি পাশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মত নগণ্য ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দিতে এত মানুষের সমাগম আমাকে ঋণী করেছে। প্রবীণ এ সাংবাদিক নিজেকে কম শিক্ষিত বললেও তাঁর অর্জন শুনে অনেকেই থ বনে গেছেন। সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ জানান,বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর কমনওয়েলথ স্কলারশীপ পাওয়া প্রথম তৃণমুল সাংবাদিক তিনি। এই স্কলারশীপ পাওয়া অবস্থায় তিনি যোগ দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে। উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
নিউইয়র্কে থাকা অবস্থায় তিনি অনুধাবন করেন, দেশে চলমান অন্যায়ের প্রতিবাদ ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের সকল অধিকার আদায়ের জন্য একটি নিজস্ব মুখপত্র থাকা প্রয়োজন। আর এই চিন্তা থেকেই সাপ্তাহিক প্রবাসী নামে একটি পত্রিকা বের করেন।
লেখালেখির এই নেশার কারণে নিজের প্রবাসী জীবনের কষ্টের কথা বলে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। দু:সময়ে যারা সহায়তা করেছেন তাদের কথা বলতে গিয়ে বক্তৃতার মাঝখানে তিনি চোখের পানি ফেলেন। এ সময় আয়োজকদের একজন তাঁকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন ও তিনি তাঁর বক্তৃতা আবার শুরু করেন।
সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ তাঁর এ পর্যায়ের আসার পেছনে স্ত্রী দিলরুবা আক্তারের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। পরিবারের খরচ চালাতে স্ত্রী দিলরুবা আক্তারের বেবি সিটিংয়ের কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর প্রতিটি উচ্চারণে ছিল সত্য বলার সীমাহীন সাহস, যা তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করেছে।
উল্লেখ্য, ডলারের মোহে থাকা কমিউনিটিতে একজন প্রবীণ সাংবাদিককে সংবর্ধনা দিতে সব শ্রেণী পেশার মানুষের ঢল ছিল লক্ষণীয়। এই অনুষ্ঠান যেন আবারও সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে, গুণী মানুষের এখনও কদর আছে।
বক্তৃতা শেষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেক কাটেন এ বর্ষীয়ান সাংবাদিক। পরে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত পরিবেশন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়, স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শহীদ হাসান, শাহ মাহবুবসহ অনেকে।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিল কবিতা ও নৃত্যানুষ্ঠান। নৈশভোজের মাধ্যমে ভাঙ্গে এ মিলনমেলা।
শাহ ফারুক রহমান
এডিটর, বিডিইয়র্ক, নিউইয়র্ক।