শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২২
জিকির, নফল ইবাদত, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত,ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদ ও বাসা বাড়িতে পালিত হল পবিত্র লাইলাতুল কদর। নারী, পুরুষ, ছোট বড় সব বয়েসী মুসলমানদের উপস্থিতিতে প্রতিটি মসজিদ ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
নিউইয়র্কের প্রতিটি মসজিদেই ছিল ইফতার ও সেহরির বিশেষ ব্যবস্থা। সেজন্য ইফতারের আগেই মসজিদগুলোতে আসতে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। মুলত ইফতার ও মাগরিবের নামাজের কিছুটা সময় পর থেকেই শুরু হয় বয়ান। প্রতিটি মসজিদের খতিব ও ইমামগণ পবিত্র লাইলাতুল কদরের ফজিলত নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। আর এই বয়ান ধরে এশার সময় মসজিদগুলো ধর্মপ্রাণ মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়। কারণ অনেক মুসল্লি নিজ বাসায় ইফতার করে মসজিদে আসেন।
পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে মসজিদগুলো মুসল্লিতে পরিপূর্ণ থাকে বিধায় অধিকাংশ মসজিদে ছিল ফান্ড রেইজিংয়ের ব্যবস্থা। এশার নামাজের পর এ ফান্ড রেইজিং- এ ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা অকাতরে দান করেন আল্লাহর ঘর ও এ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
ফান্ড রেইজিং শেষে শুরু হয় তারাবীহ’র নামাজ। অনেক মসজিদেই ভিতরে স্থান সংকূলান না হওয়ায় মুসল্লিগণকে বাইরে শীতের মধ্যেই নামাজ পড়তে দেখা যায়। এশা ও তারাবীহ শেষে শুরু হয় ব্যক্তিগত ইবাদত। এ সময় প্রত্যেক মুসল্লি কখনও কোরআন তেলাওয়াত, কখনও কদরের নামাজ, কখনও নিজেদের মধ্যে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা অথবা একান্ত দোয়ায় নিজেদের মশগুল রাখেন। ফাঁকে ফাঁকে মুসল্লিদের উদ্দেশ্য বয়ান করেন খতিব ও ইমামগণ। শেষ রাতের দিকে প্রতিটি মসজিদে ইমামের সঙ্গে পড়া হয় বিশেষ নামাজ।
বিশেষ নামাজের পর মুসল্লিগণের মাঝে সেহরির খাবার পরিবেশন করা হয়। সেই সঙ্গে বিশেষ নামাজের পর ছিল বিশেষ মোনাজাত। এ সময় আমিন আমিন ধ্বনিতে মুসল্লিরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
সবশেষে ফজরের নামাজের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পূণ্য রজনীর ইবাদত বন্দেগী। মহান আল্লাহ পাকের অসীম কৃপা ও রহমত লাভের গভীর প্রত্যাশা নিয়ে ঘরে ফিরেন মুসল্লিরা।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কমিউনিটিতেও পবিত্র লাইলাতুল কদর উদযাপিত হয় স্বতস্ফুর্তভাবে। নগরীর জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, ম্যানহাটন, ব্রন্কস, লংআইল্যান্ডের বাংলাদেশি কমিউনিটির মসজিদগুলোতে ছিল মুসল্লিদের উপচেপরা ভীড়। বিশেষ এই রাতে গোটা কমিউনিটির মানুষ ছিলেন ইবাদতে মশগুল। মসজিদগুলোর পাশাপাশি প্রতিটি বাড়িতে ছিল বিশেষ খাবারের আয়োজন।
শাহ ফারুক রহমান
এডিটর, বিডিইয়র্ক, নিউইয়র্ক।