বুধবার, ০৪ মে, ২০২২
যথাযোগ্য মর্যাদা আর উৎসবমুখর পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায় তাদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পাঁচ হাজার মসজিদ ও খোলা মাঠে ঈদ উল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিউইয়র্কে সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কিন্তু এই বৃষ্টি মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদ আনন্দকে এতটুকু ম্লান করতে পারেনি।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কমিউনিটির মানুষের ইবাদতের প্রাণকেন্দ্র জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে মোট চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড.এম মনিরুল ইসলাম ছাড়াও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মুলধারার রাজনীতিবিদগণ।
এ সময় মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে কনসাল জেনারেল ড.এম মনিরুল ইসলাম বলেন,এই ঈদ আমাদের সব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। গোটা রমজান মাস নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষ নিজেদেরকে প্রতিটি মুহুর্ত ইবাদতে মশগুল রেখেছিলেন। বিশেষ করে নতুন তরুন প্রজন্মের কথা আলাদা করেই বলতে হয়। তারা পুরো রমজান মাস ছিল মসজিদ কেন্দ্রিক। এতে বুঝা যায় আমাদের তরুন সমাজ সঠিক পথেই আছে।
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার ব্রেড লেডার বলেন, সব ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের মানুষকে নিয়ে আমরা শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্র গড়ে তুলব। তিনি সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
পবিত্র ঈদ উপলক্ষে ঈদ জামাতপূর্ব আলোচনায় অংশ নিয়ে মুল্লিদের ঈদের শুভেচ্ছা জানান,স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপরিন,সিটির পাবলিক এডভোকেট উইলিয়াম জুমানে, কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এ্যাটর্নী মেলিন্ডা গেটস,ডিস্ট্রিক্ট-২৭ থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলওম্যান নাতাশা উইলিয়ামহলসহ ডেমোক্রেট নেতৃবৃন্দ।
এর আগে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানান সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ডা.সিদ্দিকুর রহমান।
প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা আবু জাফর বেগ। নামাজ শেষে খুতবায় আল্লাহ ও রাসুল (সা:) তথা দ্বীনের উপর আলোকপাত করেন জাফর বেগ।তিনি সবাইকে রমজানে ইবাদতের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে তা আগামী রোজা পর্যন্ত ধরে রাখার অনুরোধ জানান।
এরপর এখানে আরও তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতের পর বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় পরের জামাতগুলোতে মুসল্লিদের মসজিদের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে দেখা যায়। এ সময় গোটা এলাকা মুসল্লিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। নামাজ শেষে ঈদ আনন্দ শেয়ার করতে মুসল্লিগের মধ্যে কোলাকূলি অন্যরকম সৌন্দর্যের দেখা মেলে।
এছাড়া জ্যামাইকার অন্যান্য মসজিদসহ নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, ব্রন্কস, লংআইল্যান্ডের প্রতিটি মসজিদে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
পবিত্র ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিটি বাসায় ছিল বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। ঈদের নামাজের পর পরই পরিবার পরিজন নিয়ে একে অন্যের বাড়িতে ছুটে যান সবাই। খাওয়া, গল্প আর আড্ডায় কাটে তাদের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহুর্ত। বিকেলে প্রতিটি এলাকায় ঈদের নতুন জামা পরিহিত মানুষগুলোকে আড্ডা দিতে দেখা যায় গভীর রাত পর্যন্ত।
শাহ ফারুক রহমান
এডিটর, বিডিইয়র্ক, নিউইয়র্ক।