শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২
দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক নগরী। গত বুধবার রাত ৯টায় দুর্বৃত্তের ধাক্কায় ট্রেনের নীচে কাটা পড়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন বাংলাদেশি কলেজ ছাত্রী জিনাত হোসেন(ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।
নিহত এই কলেজ ছাত্রী নিউইয়র্কের হান্টার কলেজের শিক্ষার্থী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ২৩ বছর। নিহত কলেজ ছাত্রী জিনাত হোসেন বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার জগতপুর গ্রামের অধিবাসী আমির হোসেনের কন্যা। বৃহত্তর কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি ডা. এনামুল হক সম্পর্কে জিনাতের খালু হন। জিনাত পরিবারের সঙ্গে ব্রুকলিনের ৮ম এভিনিউতে বসবাস করতেন। ২০১৫ সালে জিনাত হোসেন বাবা মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। জিনাতের একমাত্র ভাই ডাক্তার। তিনি বাংলাদেশে থাকেন। তবে তাঁর মৃত্যু নিয়ে কিছুটা ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জিনাতের ক্লাস শেষ হতে একটু রাত হয়। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে জিনাতকে এগিয়ে নিয়ে আসতে পরিবারের সদস্য অপেক্ষা করতে থাকেন ব্রুকলিনের অষ্টম এভিনিউ’র স্টেশনে। কিন্তু জিনাত সময়মত না আসায় পরিবারের সবাই ও আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন জায়গায় জিনাতের খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন।
জিনাতের খালু বৃহত্তর কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি ডা. এনামুল হক জানান,রাত ১টায় নিউইয়র্কের পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে জানানো হয়, ব্রুকলিনের ইউটিকা স্টেশনে দুর্বৃত্তের বা অন্য কারও ধাক্কায় ট্রেনে কাটা পড়ে জিনাত হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ইউটিকা স্টেশনে দুর্বৃত্তরা তাঁর পার্স টান দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় জিনাত তাদের পিছু নেয়। এ সময় দুর্বৃত্তের ধাক্কায় অথবা অন্য কারও সঙ্গে ধাক্কায় জিনাত ট্রেন লাইনে পড়ে যান এবং চলন্ত চ্রেনে কাটা পড়ে তিনি মারা যান। তবে জিনাত কেন ইউটিকা স্টেশনে গেলেন সেটা নিয়ে অথবা মৃত্যু নিয়ে কিছুটা রহস্যের তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বিস্তারিত কিছু বলছেনা।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, ময়না তদন্ত শেষে জিনাত হোসেনের মরদেহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে, একমাত্র কন্যার মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন জিনাতের বাবা আমির হোসেন ও মা জেসমিন হোসেন হিরা।সেইসঙ্গে এই মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকেই ব্রুকলিনে জিনাতদের বাসায় যান এবং শোকে মূহ্যমান পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জিনাতের মরদেহ পাবার পর জানাযা ও দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
শাহ ফারুক রহমান
এডিটর, বিডিইয়র্ক, নিউইয়র্ক।