সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল আজ শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ কনস্যুলেটজেনারেলে যথাযোগ্য মর্যাদায় “মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাদিবস-২০২৫” উদযাপন করে। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন পেশাজীবি, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম ও কমিউনিটিসদস্যসহ বিপুল সংখ্যক দেশী-বিদেশী অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্তৃকপ্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে ৫২’র সকল ভাষা শহিদ, ৭১-এর সকল শহিদ ও ২০২৪ এর জুলাই-আগষ্টে সকল শহিদের স্মরণে ও সম্মানে এক মিনিট নীরবতাপালন করা হয়।
কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা তাঁর স্বাগত বক্তব্যে “মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫” এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলেধরেন। তিনি বলেন, মূলত: ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীন সার্বভৌমবাংলাদেশের ভিত্তি প্রোথিত হয় যা পূর্ণতা পায় মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। তিনি ৫২’র মহান ভাষা শহিদ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ সকল ভাষা শহিদ, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪ এর জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবংজুলাই আগষ্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থ্যতাকামনা করেন। তিনি বলেন ভাষা একটি একান্ত মানবিক বিষয় যা মানুষের অস্তিত্বেরপ্রায় সমার্থক। এটি সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত যে একজন ব্যক্তির বোধগত, বুদ্ধিবৃত্তিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দক্ষতার সঠিক পুষ্টি তার মাতৃভাষার মাধ্যমেবিকশিত হয়। তাই নিজের মাতৃভাষা লেখা ও ব্যবহার করার অধিকার প্রত্যেকব্যক্তির জন্য অপরিহার্য। ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূলচেতনা হল পৃথিবীর সকল ভাষা ও সংস্কৃতির নিজস্বতা রক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করাবলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারীকেআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে, যা জাতি হিসেবে আমাদেরকে গৌরবান্বিতকরেছে। এ বছর ’আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এর রজতজয়ন্তী। যুক্তরাষ্ট্রেবসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসী ভাই-বোনেরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার চর্চা এবংপ্রসারে, বিশেষতঃ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে, যে চমৎকার ভূমিকা পালনকরছেন, তিনি তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কনসাল জেনারেল আরো বলেন যে, ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে একগৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে। ২০২৪ সালের ফ্যসিবাদ বিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী গণ-অভ্যুথান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্যসুযোগ সৃষ্টি করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বেবাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার যে সংস্কার কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন, তাবাস্তবায়নের জন্য তিনি সকলের ঐকান্তিক সহযোগীতা কামনা করেন। বাংলাদেশেরআর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী ভাই-বোনদের অধিকতরঅবদান রাখার জন্য তিনি আহবান জানান।
উন্মুক্ত আলোচনায় নিউইয়র্কস্থ বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহকমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটিশিল্পীদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয় যা দর্শকদেরদ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদেরকে বিভিন্ন প্রকারঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার দ্বারা আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বে কনসাল জেনারেল মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিকমাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন কর্তৃকআয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি কর্তৃকআয়োজিত অনুষ্ঠানে একুশের প্রথম প্রহরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মিত শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
বিডিইয়র্ক ডেস্ক, নিউইয়র্ক।