বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতি লালন এবং নতুন প্রজন্মে প্রবাহিত করতে নিরন্তরভাবে কর্মরত ‘বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতন’র ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল জমকালো এক সমাবেশ হলো নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স প্যালেসের মিলনায়তনে। আর এ সমাবেশটি বর্ণিল হয়ে উঠেছিল এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-প্রেসিডেন্ট ও সিইও ড. সবিতা দাসকে সর্বস্তরের প্রবাসীর পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা আর কথার মালায় অভিনন্দিত করার মধ্যদিয়ে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের পর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন মুনমুন সাহা।
শুরু হয় সমবেত কন্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ পরিবেশনের মাধ্যমে। বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের সকল শিল্পী এতে অংশ নেন। এরপরই ধ্বণিত হয় ‘এসো হে বৈশাখ-এসো এসো’। গানে গানে উপস্থিত সকলে আপ্লুত হবার আমেজেই ড. সবিতা দাসকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানানোর পর্ব শুরু হয়। এতে অংশ নেন বহ্নিশিখার শিল্পী, কলা-কুশলী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সমাজসেবক, সাংস্কৃতিক সংগঠক, পেশাজীবী ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। সকলেই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ড. সবিতা দাসকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপনের মাঝ দিয়ে বহ্নিশিখার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনাও করেছেন।
শুভেচ্ছা-শ্রদ্ধা আর ভালবাসার জবাবে ড. সবিতা দাস সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে বলেন, প্রতিটি পরতে পরতে বিরাজিত সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে জীবন হউক শান্তিময়, মর্যাদাপূর্ণ ও প্রগতির পথে উদ্ভাসিত। সংস্কৃতি, মানবতা ঐতিহ্যের শক্তিতে গড়ে উঠুক একটি সুন্দর আগামী। বৈশাখ মানেই নতুন আহবান। পুরনো দু:খ-ক্লান্তি আর গ্লানিকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা। এ সময় সবিতা দাস সকলের সহায়তা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকারিগণের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, বিজ্ঞানী ও লেখক ড. ধনঞ্জয় সাহা, অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, কম্যুনিটি লিডার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ, রওশন আরা ফারুক, জসিম চৌধুরী, ডা. প্রভাত দাস, ভজন সরকার, রামদাস ঘরামি, সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, প্রজ্ঞা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উত্তম সাহা, সাংস্কৃতিক সংগঠক সাবিনা হাই উবি।
রজতজয়ন্তি সমাবেশে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করছেন বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের শিল্পীরা। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।
সাবিনা হাই উর্বি বহ্নিশিখার দীর্ঘ পথচলার প্রসঙ্গ আলোকপাতকালে উল্লেখ করেন যে, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতার ধৈর্য ও প্রজ্ঞার মিশ্রনে বহ্নিশিখা আজ প্রবাসী বাঙালিদের হৃদয়ের মণিকোঠায় আসন গাড়তে সক্ষম হয়েছে। তার প্রমাণ আজকের সমাবেশে সর্বস্তরের মানুষের সমাগম।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান স্টিভেন রাঘার প্রতিনিধি কাজী মরিয়ম বহ্নিশিখাকে সাইটেশন প্রদান করেন।
এরপর আবারো সমবেত কন্ঠে সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে মধ্যরাতে সমাপ্তির প্রাক্কালে বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিক হিসেবে আপ্যায়িত করা হয় পিঠা-পুলিসহ নানা খাবারে। বহ্নিশিখার এ আয়োজন বৈচিত্রময় হয়ে উঠেছিল নাচ, গান, আবৃত্তি আর কথকতার পাশাপাশি মিলনায়তনে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকান্ডের স্টল বসানোর ফলে।
আবৃত্তি ও সঙ্গীতে অংশগ্রহণকারি শিল্পীগণের মধ্যে ছিলেন রূনা রয়, শাকিলা রুনা, ডা. রুমা চৌধুরী, সৌভিথ চৌধুরী, অরুনা সাহা, সুস্মিতা হালদার, পারিজাত দাস, শিলা চন্দ্র, সুশীল সিনহা, চন্দনা ভট্টাচার্য, সৈয়দ আহমদ বাবলা, ফারজিন স্বর্ণা, অনুষ্কা সেনগুপ্ত, ডা. কামরুল ইসলাম, সোমা রোজারিয়ো, ইমন বিশ্বাস, জুলি খাস্তগীর, মুনমুন সাহা, দীপক দাস, আয়েশা খান, প্রদীপ কুন্ডু, অঙ্কিতা বিশ্বাস, অথরা ঘোষ, সুদেষ্ণ সাহা, অস্মিতা মন্ডল, অনামিকা চন্দ, রায়াশি বিশ্বাস, মিথি বড়ুয়া, পূর্ণ চৌধুরী, সপ্তর্ষী বণিক, পূজা দাস, প্রিণা নন্দী, সৃজিতা হিয়া, উইলি নন্দি, প্রমুখ। সামগ্রিক নির্দেশনা পরিচালনায় ছিলেন ড. সবিতা দাস।
বিডিইয়র্ক ডেস্ক, নিউইয়র্ক।