শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফরশেষে আজ (২৫ অক্টোবর ২০২৪) দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সফরকালে তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা মিশনের সাথে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, এবং কানাডার উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
গত ১৭ অক্টোবর সেনাবাহিনী প্রধান নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনস বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল Mr. Jean Pierre Lacroix, ডিপার্টমেন্ট অব অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল Mr. Atul Khare, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল Ms. Ilze Brands Kehris, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল ও পিস বিল্ডিং অ্যাফেয়ার্স এর পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং প্যাসিফিক বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল Mohammed Khaled Khiari এবং ডাইরেক্টর অব অফিস ফর পিস কিপিং স্ট্রাটেজিক পার্টনারশিপ General Jai Menon, এর সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী, বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এছাড়াও, তিনি বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চলমান কর্মকান্ডের উপর আলোকপাত করেন। সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সরকার এবং সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্থ-সামাজিক ও শান্তি শৃঙ্খলার উন্নয়নে গৃহীত নানামুখি ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন। তিনি বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী কন্টিনজেন্টসমূহ কর্তৃক স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনার বিষয়ও তাদের অবগত করেন। মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে শান্তিরক্ষা বিষয়ক প্রশিক্ষণ বিনিময়, আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মিশন সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়। সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের জোরালো ভূমিকা ও সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়াও, সেনাপ্রধান নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন পরিদর্শন করেন এবং স্থায়ী প্রতিনিধির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
গত ২২ অক্টোবর সেনাপ্রধান ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগনে যুক্তরাষ্ট্রের চীফ অব স্টাফ অব দি আর্মি General Randy A. George এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকালে তাঁরা দুই দেশের সেনাবাহিনীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন, প্রশিক্ষণ সহায়তা, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন ও পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা, দুর্যোগ পরবর্তী মানবিক সহায়তা, যৌথ প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচনা করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র সেনাপ্রধানের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব ডিফেন্স অফিসের ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা বিষয়ক সহকারী সামরিক সচিব Dr. Ely Ratner এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময়ে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশসমূহ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। সাক্ষাৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী এবং দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত জ্যেষ্ঠ পরিচালক Ms Lindsey W. Ford সহ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকারী সচিব Mr. Donald Lu এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে সেনাপ্রধান দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, এবং সরকারের সমর্থনে সেনাবাহিনীর বিবিধ কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত করেন। উক্ত বৈঠকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের অন্যান্য উর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কানাডা সফরকালে সেনাপ্রধান ভাইস চিফ অব কানাডিয়ান ডিফেন্স স্টাফ Lieutenant General Stephen R Kelsey এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তিনি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সহজতর করার জন্য কথা বলেন। তিনি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা বিশেষ করে সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রশিক্ষনার্থী বিনিময়ের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও, কানাডিয়ান পার্লামেন্টের নাগরিকত্ব ও ইমিগ্রেশন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য মাননীয় সংসদ Salma Zahid সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তাঁরা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সেনাপ্রধান বিশেষ করে ছাত্রদের এবং কর্মরত/অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসারগণের ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করা, শিক্ষা বিনিময়ের জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে MOU স্বাক্ষর, কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ পরিচর্যাকারী পাঠানোর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও, বাংলাদেশে মনোনীত কানাডার হাইকমিশনার HE Ajit Singh এবং কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান সেনাপ্রধানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী প্রধান গত ১৫ অক্টোবর সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা গমন করেছিলেন।
বিডিইয়র্ক ডেস্ক,ঢাকা।